ভারতে প্রতিবছর ২০ হাজার শিশু ধর্ষণের শিকার হয়।
ভারতে প্রতিবছর ২০ হাজার শিশু ধর্ষণের শিকার হয়।
-----------------------------------------------------------------------
ভারতে শিশু ধর্ষণ ও হত্যা বেড়েছে নজিরবিহীনভাবে। হিংস্র পুরুষ কীভাবে ছোট্ট শিশুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে, তা কল্পনারও অতীত। এ অবস্থায় ভারতজুড়ে মানুষ ধর্ষণের বিরুদ্ধে মুখর। কর্মস্থল, বাড়ি, সড়ক—সর্বত্র আলোচনায় ধর্ষণ। এর কি কোনো শেষ নেই!
দেশটিতে প্রতিবছর ২০ হাজার শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। তার মানে সেখানে প্রতিদিন ৫০ জন বা ঘণ্টায় দুজন শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। বয়সে এরা ৭ মাস থেকে ১৭ বছরের। জঘন্য ঘটনাগুলো বেশি ঘটছে কাঠুয়া, সুরাট, এটাহ, বালাশোর, ইন্দোর ও ছাত্রাতে।
দেশবাসীর বিক্ষোভের মুখে কেন্দ্রীয় সরকার ১২ বছর বা তার কম বয়সী শিশুকে ধর্ষণকারীর মৃত্যুদণ্ডের বিধান করে একটা অধ্যাদেশ জারি করেছে। কিন্তু তাতে কি স্বস্তি মিলবে, ভারতবাসীর মুক্তি মিলবে এই অভিশাপ থেকে?
♦গত ১০ জানুয়ারির ঘটনা। জম্মুর কাঠুয়া জেলার পল্লি এলাকা বকরওয়াল থেকে ছোট্ট একটি শিশুকে অপহরণ করা হয়। মন্দিরে এক সপ্তাহ আটকে রেখে নানা নির্যাতন ও উপর্যুপরি ধর্ষণ করেই থেমে থাকেনি পিশাচেরা। বৈদ্যুতিক শক দিয়ে ও না খাইয়ে রেখে মেয়েটিকে ধীরে ধীরে হত্যা করা হয়। আট বছরের এই শিশুটির সঙ্গে যেন তাঁদের যুগ যুগের শত্রুতা!
♦গত ৫ এপ্রিল গুজরাটের সুরাটে ১১ বছরের একটি শিশুর লাশ পাওয়া যায়। তার শরীরে ৮৬টি ক্ষত ছিল।
♦ওডিশার বালাশোরে ১৩ ও ১৪ এপ্রিল কয়েকটি শিশুকে নির্যাতন করা হয়।
♦১৭ থেকে ১৯ এপ্রিলের মধ্যে ১০ বছরের নিচের তিনটি শিশু পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয় মা-বাবার সঙ্গে বিবাহের অনুষ্ঠানে গিয়ে। তাদের দুজন উত্তর প্রদেশের এটাহের। আরেকজন ছত্তিশগড়ের কাবিরধামের।
♦২০ এপ্রিল মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে মা-বাবার মাঝখানে ঘুমানো ছয় মাস বয়সী শিশুকে চুরি করে নিয়ে যায় ২১ বছরের এক তরুণ। এ ঘটনাটি দেখা যায় ক্লোজড সার্কিট টিভির ভিডিওচিত্রে। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ধর্ষণের পর মাথায় আঘাত করে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
♦৫ থেকে ৬ মের মধ্যে ঝাড়খন্ডের ছাত্রায় ঘটে জঘন্য দুটি ঘটনা। দুটি শিশুকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের পর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
😭শিশু ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের সংখ্যা বিবেচনায় ভারত বিশ্বের বৃহত্তম দেশ।
😭ভারতে ২০১৫ সালে ১০ হাজার ৮৫৪ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়।
😭২০১৬ সালে তা বেড়ে হয় ১৯ হাজার ৭৬৫।
♦সবচেয়ে বেশি শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটে #মধ্যপ্রদেশে।
#মধ্যপ্রদেশে এক বছরে ২ হাজার ৪৬৭ শিশু ধর্ষণের মামলা হয়। ভয়াবহতা বিবেচনায় এরপরে আছে যথাক্রমে মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ, ওডিশা ও তামিলনাড়ু।
♦পরিবারে ৪৬ শতাংশ শিশু বাবা ও সৎবাবার পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়। এটা মোট শিশু ধর্ষণের মামলার ৭ দশমিক ২ শতাংশ।
♥কিন্তু যারা এই অপকর্মে জড়ান তারা অন্য সব স্বাভাবিক মানুষের মতোই। তারা সজ্জন প্রতিবেশী, উদার মনের দোকানি, কাছের আত্মীয়, শিক্ষক, কোচ। তারা সমাজের সব স্তরের। যদিও গরিবেরাই বেশি আইনের আওতায় আসে। এখানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি থেকে আধ্যাত্মিক নেতারাও আছেন।’
♦তবে তাদের বেশির ভাগই শিশুদের খুবই প্রিয়। তারা শিশুদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর তাদের আস্থাভাজন হওয়ার চেষ্টা করে। তারপর নানাভাবে আকৃষ্ট করে। খাবার ও খেলনা কিনে দেয়। বেড়াতে নিয়ে যায়।
♦যারা বিপন্ন, দুর্বল ও প্রতিরোধ গড়তে অক্ষম বলেই শিশুরা বেশি ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়। আর এখানে ধর্ষণকারী আবির্ভূত হয় ক্ষমতা ও প্রভাব নিয়ে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। শিশু ধর্ষণকারীর তালিকায় রয়েছে সহিংসতায় জড়ানো, ক্ষোভ ও নেতিবাচক চিন্তা নিয়ে বড় হওয়া, মারধর ও বঞ্চনার শিকার হওয়া ব্যক্তিরা। তাদের ক্ষেত্রে যৌন চাহিদা পূরণ মৌলিক বিষয় নয়। বরং শত্রুতা, ক্রোধ ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়।
♦নিঠারি মামলার সুরিন্দর কোলির কথা হয়তো মনে আছে আপনাদের, সুরিন্দর ১৮টি শিশুকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন সাজা খাটছে। সুরিন্দর ছিল ধর্ষকামী। সে বয়স্ক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের সামাজিক কৌশল অবলম্বন করতে না পেরে শিশুদের ওপর হামলে পড়ত।
♦শিশু ধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে ২০১১ সালে গবেষণা করেছেন অপরাধবিজ্ঞানী হানি মাটিয়ানি। তিনি দোষী সাব্যস্ত ১০০ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এদের
♦৩৮ শতাংশ পরিকল্পনা করে এ অপরাধ করার কথা স্বীকার করেছে।
♦পরিকল্পনা করে ধর্ষণে জড়ানো ব্যক্তিদের ৫৩ শতাংশ বলেছে, তারা যৌন চাহিদা মেটাতে শিশু ধর্ষণে জড়িয়েছে।
♦৪০ শতাংশের লক্ষ্য ছিল প্রতিশোধ নেওয়া,
♦৫ শতাংশ টাকার জন্য ও
♦অন্যরা (৩ শতাংশ) শিশুর সৌন্দর্যে ‘মুগ্ধ হয়ে’ ধর্ষণ করার কথা স্বীকার করেছে।
♦৬২ শতাংশ পরিকল্পনা না করে ধর্ষণে লিপ্ত হওয়ার কথা বলেছে। তাদের
♦২৭ শতাংশ দাবি করেছে অনিয়ন্ত্রিত যৌন তাড়নার মুখে শিশুকে একা পেয়ে তারা ধর্ষণ করেছে।
♦২১ শতাংশ বলেছে শিশুরা তাদের ‘বিমোহিত’ করেছে।
♦২১ শতাংশ শত্রুতা থেকে এ অপরাধ ঘটায়।
♦১৩ শতাংশ বলেছে শিশুটি তাদের সঙ্গে বসবাসকালে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
♦৬ শতাংশ বলেছে তারা মাতাল হয়ে ধর্ষণে লিপ্ত হয়েছে।
♦৩৪ শতাংশ বলেছে বয়সের কারণে ও হাতের কাছে থাকায় সহজেই শিশু ধর্ষণের শিকার হয়।
♦১৫ শতাংশ বলেছে শিশুকে সহজে নিয়ন্ত্রণে আনা যায় (ভয় দেখিয়ে ও জোর করে)।
♦২০১৪সালে ধনঞ্জয় এর মৃত্যু দন্ডঃ
একটি শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ২০০৪ সালের কলকাতার আলীপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের (৩৯) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। কিন্তু এ ঘটনায় তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়। কারণ ফাঁসির আগে ধনঞ্জয়ের সর্বশেষ কথা ছিল, ‘আমি নির্দোষ।’ আর গরিব হওয়ায় ধনঞ্জয় আইনি লড়াই চালাতে পারেননি। যেতে পারেননি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত।
কিন্তু ধনঞ্জয়ের মৃত্যুদণ্ড ধর্ষণ কমাতে পারেনি। ২০০৪ সালে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটে ৩ হাজার ৫৪২টি। ২০০৫ সালে এই হার ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে হয় ৪ হাজার ২৬টি।
======================================
আমার ফেসবুক পেজ :- www.facebook.com/AbdullahIbneMasud5
-----------------------------------------------------------------------
আমার ব্লগ সাইট :- www.AbdullahIbneMasud5.blogspot.com
-----------------------------------------------------------------------
আমার ফেসবুক গ্রুপ:- www.facebook.com/groups/AbdullahIbneMasud5
No comments
Thanks for your comments. I will reply you as soon as.