মসজিদে তর্কাতর্কি
মসজিদ আল্লাহর ঘর আর শিশুরা হচ্ছে আল্লাহর ফেরেশতা। আল্লাহর ঘরে ফেরেশতারা এসে খেলবে না তাহলে কি শয়তান এসে খেলবে?
আজ ইফতার শেষে নামাজে যাই। সেখানে কিছু ছোট ছোট বাচ্চা মসজিদে ইফতার করেছিলো। যখন নামাজে দাঁড়ালাম তখন ছোট্ট একটি বাচ্চা আমাদের সামনে দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে আবার পিছন থেকে সামনে থেকে পিছনে দৌড়াচ্ছে। এইভাবে কয়েকবার যায় বাচ্চাটি। তাছাড়া পিছনে অন্যান্য বাচ্চাদের দুষ্টামিতো আছেই। নামাজ শেষে মুরুব্বীরা রেগে গিয়ে বললো, এইগুলোরে কিসের জন্যে যে মসজিদে নিয়ে আসে বুঝিনা। অন্যজন বললো, ঘাড়ে ধরে বের করে দেয়ার দরকার এগুলারে। অন্যজন বলছে, ইফাতের সময়েও শান্তি পাইনাই, আর এখন নামাজেও শুরু করছে ফাইজলামি।
আমি কথাগুলো শুনেই রেগে গেলাম। এই জীবনের প্রথম মসজিদে কোনো ব্যাপারে নাক ডুবালাম আমি। কিন্তু ইচ্ছে না থাকা সত্বেও বলতে হলো কিছু কথা মুরুব্বিদেরকে। তাদের কথাগুলো খুবই জঘন্য ছিলো, যখন ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের বকাঝকা করছিলো আমার খুব খারাপ লেগেছিলো তাই আমি রেগে গিয়ে বললাম দেখেন জ্ঞান না থাকলে যেটা হয় আর কি!
মসজিদ হলো আল্লাহর ঘর, আর শিশুরা হলো আল্লাহর ফেরেশতা। আর আল্লাহর ঘরে তার ফেরেশতারা খেলা করবেনা তবে কে করবে বলেন। সবাই আমার কথা শুনে চুপ করে রইলো। তারপর আবার বললাম। আপনারা হয়তো ভাবছেন এই বাচ্চারা আমাদের বিরক্ত করছে মসজিদে এসে, এটা ভাবা একেবারেই ভুল ধারনা আমাদের। কেননা, তারা অবুঝ মানুষ তারা জানেনা মসজিদ কি জিনিস। এখানে ইবাদত করে নাকি খেলাধুলা করে তারা সেটা বুঝবেনা এটাই স্বাভাবিক তবে তাদের আনন্দে কিন্তু আল্লাহ অখুশি নন। আল্লাহ তাদের ফেরেশতা বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাছাড়া বাচ্চারা কিন্তু আমাদের কারো লুঙ্গি ধরে টানও দেননি আবার নামাজের সময়ে কেউ গানের মধ্যেও টান দেননি। প্রকৃত ভাবে আমরাই কিন্তু হৈচৈ করেছি তারা মসজিদে আসাতে। এই বাচ্চারা মসজিদে আসুন কেননা এতে করে তাদের মসজিদে আসার অভ্যাস হবে।
একদিন তারা নামাজ পড়া শুরু করবে। আমরা যদি আমাদের ধর্মীয় স্থানগুলোতে আমাদের বাচ্চাদের নিয়ে না আসি তারা কিভাবে বুঝবে তার আব্বা কোন ধর্মের অনুসারী? তারা কিভাবে বুঝবে আমাদের ধর্ম মানে জঙ্গিবাদ না। আমাদের ইসলাম ধর্ম মানে শান্তি যা অন্যধর্মে নাই।
যেখানে আল্লাহ নিজেই রাগ হচ্ছেনা এই অবুঝ শিশুরা মসজিদে আসাতে তবে আমরা কেন সামান্য মানুষ হয়ে তাদের আসাতে রাগ করবো? তাই দয়া করে কেউ তাদের উপর খারাপ চিন্তা না করে তাদের বুঝান নামাজের আগে বা পরে এই বলে যে, এইখানে দুষ্টামি করেনা। কথা বলে না এতে আল্লাহ তোমাকে পছন্দ করবেনা। যদিও তাদের বুঝালেও বুঝবেনা তবুও তাদের বকাঝকা না করাই আমাদের উচিৎ।
পরে হুজুরকে ঢেকে বললাম, হুজুর মহল্লার মুরুব্বিদের কিছু নৈতিক শিক্ষাও দিয়েন। তারা অনেক কিছুই জানেনা, তারা অনেক কুসংস্কার নিয়ে পড়ে আছে।
আমার এইকথাগুলো লেখার একটাই উদ্দেশ্য হলো, আপনারা যারা এইসব করেন মসজিদের ভিতরে বাচ্চাদের সাথে তারাও প্লিজ একটু বুঝার চেষ্টা করুন।
যদিও আমার রেগে যাওয়া উচিত হয়নি মুরুব্বিদের সাথে। আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুক। আর দুনিয়ার সকল মুরুব্বিদের আল্লাহ বুঝ দান করুক।
No comments
Thanks for your comments. I will reply you as soon as.