নবীদের ব্যাখ্যা
নবীদের ব্যাখ্যা
নবী বলতে সেসব ব্যক্তিকে বোঝানো হয় যারা দাবি করেন যে ঈশ্বর বা দেবতাদের সাথে তাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যোগাযোগ বা বার্তা বিনিময় হয়েছে। তারা নিজেরা যে সকল শিক্ষা লাভ করেন তা নিঃস্বার্থভাবে অন্যান্য লোকদের মাঝে বিলিয়ে দেন। নবিদের অধিকাংশই মানুষকে সুসংবাদ অথবা সতর্কবার্তা প্রদান করেন। নবীগণ যে বার্তা লাভ করেন তাকে নবুয়াত বলা হয়।
ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম, ইসলাম, মরমনবাদ, জরথ্রুস্ত্রবাদ, এবং অন্যান্য ধর্মে নবিগনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আব্রাহামিক ধর্মসমুহে, দুই ধরনের নবির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এরা হলেন প্রধান নবী এবং অপ্রধান নবী। প্রধান নবীগণ মানুষকে বিভিন্ন রকমের সিক্ষা প্রদান করে থাকেন। অপরদিকে, অপ্রধান নবীগণ পূর্বের নবীগণের শিক্ষাকেই পুনঃবাস্তবায়ন করেন।
ইসলাম ধর্মে নবী-
পবিত্র কোরআন শরীফে নবিদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। হযরত আদম (আঃ) কে প্রথম এবং হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) কে শেষ ও সর্ব শ্রেষ্ঠ নবী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মুসলমান বিশ্বাস করে যে আল্লাহর থেকে প্রেরিত হয়ে মানব জাতীর কল্যাণের জন্য বা সত্য পথে পরিচালিত করার জন্য যারা আগমন করেছিলেন তাদেরকে নবী হিসেবে গন্য করা হয়।
সৃষ্টির আদি থেকে আল্লাহ যত নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন তাদের সবাইকেই আল্লাহ তার একাত্মবাদ প্রচারের জন্য এবং মানুষের জীবন বিধান হিসেবে দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্যই পাঠিয়েছেন। আল্লাহর সব নবী-রাসূলই ছিল আল্লাহর একাত্মবাদে দৃঢ় বিশ্বাসী ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণকারী। আর যেহেতু আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম তাই আল্লাহর সব নবী-রাসূলের ধর্মই ইসলাম এবং তারা সবাই মুসলমান। আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, আপনি (মুহাম্মদ) তো কেবল একজন সতর্ককারী মাত্র। আর প্রত্যেক জাতির জন্যই এসেছে সতর্ককারী (পথপ্রদর্শক, নবী-রাসূল) সূরা রাদের-৭ আয়াত।
নবীদের আগমন-
পবিত্র কুরআন শরীফে মাত্র ২৫ জন নবীর কথা উল্লেখ আছে । তবে পৃথিবীতে ১২৪০০০ ( এক লক্ষ চব্বিশ হাজার) নবী এসেছিল বা আবার কিছু ইসলামিক দার্শনিকরা মনে করেন ২২৪০০০ নবীর আগমন হয়েছিল কিন্তু এর সঠিক তথ্য শুধু মাত্র আল্লাহ জানেন। কুরআনে বলা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গোত্রের জন্য আল্লাহ এক বা একাধিক নবী প্রেরণ করতেন। এবং হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)কে সমগ্র মানব জাতীর জন্য শেষ নবী হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছিল। বিশ্বাস করা হয় সব নবীদের বার্তা একি ছিল। ইসলামে বলা হয় সকল বার্তা বহন কারীই নবী ( উদাহরণ স্বরূপঃ আদম, নুহ ইব্রাহিম , মুসা, ঈশা (আঃ) ,মুহাম্মদ (সাঃ)।মুসলমানগণ বিশ্বাস করে ঈসা(আঃ) আল্লাহর পুত্র নন বরং তিনি আল্লাহর রসূল । তিনি (আল্লাহ) কাউকে জন্মদান করেননি এবং কারো থেকে জন্মগ্রহন করেননি -(সূরা ইখলাস -3) । ঈশা (আঃ) উপর ইঞ্জিল কিতাব নাজিল হয়েছে। তিনি কেয়ামতের আগে আবার পৃথিবীতে আবার আসবেন এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর অনুসারী হিসেবে মৃত্যু বরণ করবেন ।
আসমানি কিতাব অর্জন কারী নবীগণ -
আসমানী কিতাব বা ঐশ্বিক গ্রন্থ বলতে এমন কতকগুলো গ্রন্থকে বোঝানো হচ্ছে, ইসলাম ধর্মমতে মুসলমানগণ যে গ্রন্থগুলোকে ঈশ্বরপ্রদত্ত গ্রন্থ বলে বিশ্বাস করেন। ইসলাম ধর্মে যে ৭টি বিষয়ের উপর বিশেষ করে ঈমান আনতে বা বিশ্বাস স্থাপন করতে বলা হয়েছে তার মাঝে একটি হলো এই যাবতীয় আসমানী কিতাব, যা সরাসরি ঈশ্বরের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছিলো। ইসলাম ধর্মমতে, পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে সর্বমোট আসমানী কিতাব পাঠানো হয়েছে ১০৪খানা। তার মধ্যে ৪খানা হলো প্রধান আসমানী কিতাব ও বাকি ১০০খানা সহীফা।
প্রধান চারখানা আসমানী কিতাব হলো:-
তৌরাত, যা অবতীর্ণ হয় আল্লাহর বাণীবাহক হযরত মুসা (আ.)-এর উপর,
যাবুর, যা অবতীর্ণ হয় আল্লাহর বাণীবাহক হযরত দাউদ (আ.)-এর উপর,
ইনযিল, যা অবতীর্ণ হয় আল্লাহর বাণীবাহক হযরত ঈসা (আ.)-এর উপর, এবং
আল-কোরআন সর্বশেষ এবং পরিপূর্ণ আসমানী কিতাব, যা অবতীর্ণ হয় আল্লাহর বাণীবাহক হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর উপর।
নবী গনের তালিকা-
পৃথিবীতে লক্ষাধিক নবীর আগমন ঘটলেও বস্তুত কিছু সংখ্যক নবীগণের নাম জানা যায় ।
এখানে বহুল আলোচিত এবং পরিচিত নবীগণের তালিকা দেওয়া হল।
হযরত আদম (আঃ)
হযরত শীষ (আঃ)
হযরত ইদ্রিস (আঃ)
হযরত নূহ (আঃ)
হযরত হুদ (আঃ)
হযরত সালেহ (আঃ)
হযরত ইব্রাহীম (আঃ)
হযরত ইসমাইল (আঃ)
হযরত লূত (আঃ)
হযরত ইসহাক (আঃ)
হযরত ইয়াকুব (আঃ)
হযরত ইউসুফ (আঃ)
হযরত আইয়ুব (আঃ)
হযরত শোয়েব (আঃ)
হযরত মুসা (আঃ)
হযরত হারুন (আঃ)
হযরত সোলায়মান (আঃ)
হযরত দাউদ (আঃ)
হযরত যাকারিয়া (আঃ)
হযরত ইয়াহিয়া (আঃ)
হযরত ইলিয়াস (আঃ)
হযরত আল ইয়াসা (আঃ)
হযরত যুল কিফল (আঃ)
হযরত ইউনুস (আঃ)
হযরত যাবুর (আঃ)
হযরত ঈসা (আঃ)
হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)
No comments
Thanks for your comments. I will reply you as soon as.