কলেজ/ভার্সিটির কাজ কি কেবল সার্টিফিকেট প্রদান? মানুষ বানানোর দায়িত্ব তাহলে কার?
আন্তর্জাতিক শিক্ষাঙ্গনের সাথে আমাদের দেশীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর এই রাত-দিন পার্থক্য দূর হবে কবে?
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে রিপাবলিকান পার্টি সমর্থক ছাত্রদের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ হয়েছে- এমন খবর কখনো কখনো কেউ শুনেছেন? ভারতের কানপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মোদি সমর্থকদের সাথে সোনিয়া গান্ধীর সমর্থক ছাত্রদের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া হয়েছে- এমনটা কখনো দেখেছেন? ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা রাস্তা অবরোধ করে গাড়ি ভাংচুর করেছে- এমন সংবাদ আজ পর্যন্ত কেউ শুনেছেন? কেমব্রীজ ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা রামদায় শান দিচ্ছে এমন ছবি কোন পত্রিকায় আসতে দেখেছেন?
কেউ যা পারেনি, আমরা তা পেরেছি। সব সম্ভবের দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ- বেসম্ভবকে সম্ভব করাই যার কাজ। আর তাইতো বিশ্বের সেরা দুই হাজারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাতেও স্থান পায়না আমাদের কোন বিশ্ববিদ্যালয়। এদেশে এমন কোন কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় নেই যেখানে ছাত্রদের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ হয় না, ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া হয় না, রাস্তা অবরোধ হয় না, গাড়ি ভাংচুর হয় না, রেগিং হয় না, নারী নিপীড়ন হয় না, সেশন জট হয় না। দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ বলে পরিচিত বুয়েটেও সরকারী দলের ছাত্র সংগঠনের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ হতে আমরা দেখেছি, বুয়েটের শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করেছে এমনটা চিত্রও আমাদের দেখতে হয়েছে। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা তাহলে বলাই বাহুল্য!
এদেশের ছাত্রসমাজ আর কিছু জানুক বা না জানুক, আন্দোলন জিনিসটা খুব ভাল জানে! পান থেকে চুন খসলে রাস্তা অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর, বাঁশ-লাঠি নিয়ে প্রতিপক্ষের উপর বর্বরভাবে হামলে পড়া! পড়াশোনাটা এখানে গৌণ, রাজনীতি এবং ক্ষমতা প্রদর্শনই মুখ্য। আর তাই বিশ্বের অন্যান্য দেশের বিদ্যাপীঠগুলো থেকে যেখানে বেরিয়ে আসে জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, গবেষক; সেখানে আমাদের শিক্ষাঙ্গনগুলো থেকে বেরিয়ে আসে কুখ্যাত সন্ত্রাসী, দূর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ কিংবা ধর্ষনে সেঞ্চুরিয়ান।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে, এদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ছাত্ররা কি শিক্ষা পাচ্ছে? নৈতিকতা, মূল্যবোধ, শৃঙ্খলা, মানবতা কোথায়? গার্মেন্টসের শ্রমিকরাও রাস্তা অবরোধ করে, ছাত্ররাও রাস্তা অবরোধ করে। অটোরিক্সা চালকরা গাড়ি ভাংচুর করে, ছাত্ররাও গাড়ি ভাংচুর করে। বস্তির অশিক্ষিত মানুষগুলো বউ পেটায়, আবার উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিতরাও নারী নিপীড়ন করে- তাহলে অশিক্ষিত আর উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে পার্থক্যটা থাকলো কোথায়? এত পড়াশোনা করে কী লাভ- যদি নৈতিকতা কিংবা মূল্যবোধ জাগ্রত না হয়? ভার্সিটিগুলোর কাজ কি কেবল সার্টিফিকেট প্রদান করা? মানুষ বানানোর দায়িত্বটা তাহলে কার?
============= Facebook Page:- www.facebook.com/AbdullahIbneMasud5 ============= ============= My Blog site:- www.AbdullahIbneMasud5.blogspot.com =============
No comments
Thanks for your comments. I will reply you as soon as.