সূরা আন-নিসা এর বিস্তারিত আলোচনা।
সূরা আন-নিসা
কুরআন শরীফের ৪র্থ সূরা
সূরা আন নিসা (আরবি ভাষায়: سورة النساء, Sūratu an-Nisā, "অর্থ নারী") মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ৪ নম্বর সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ১৭৬টি এবং এর রূকুর সংখ্যা ২৪টি। আন নিসা সূরাটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই সূরাতে মুসলিমদের জীবন পরিচালনা ও কিভাবে একতাবদ্ধ থাকতে হবে সে সম্পর্কে বলা আছে।
নাযিল হওয়ার সময়-কাল ও বিষয়বস্তু ---
এ সূরাটি কয়েকটি ভাষণের সমষ্টি । সম্ভবত তৃতীয় হিজরীর শেষের দিক থেকে নিয়ে চতুর্থ হিজরীর শেষের দিকে অথবা পঞ্চম হিজরীর প্রথম দিকের সময়-কালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে এর বিভিন্ন অংশ নাযিল হয়। যদিও নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না, কোন আয়াত থেকে কোন আয়াত পর্যন্ত একটি ভাষণের অন্তরভুক্ত হয়ে নাযিল হয়েছিল এবং তার নাযিলের সময়টা কি ছিল, তবুও কোন কোন বিধান ও ঘটনার দিকে কোথাও কোথাও এমন সব ইঙ্গিত করা হয়েছে যার সহায়তায় রেওয়ায়াত থেকে আমরা তাদের নাযিলের তারিখ জানতে পারি। তাই এগুলোর সাহায্যে আমরা এসব বিধান ও ইঙ্গিত সংবলিত এ ভাষণগুলোর মোটামুটি একটা সীমা নির্দেশ করতে পারি।
যেমন আমরা জানি উত্তরাধিকার বণ্টন ও এতিমদের অধিকার সংবলিত বিধানসমূহ ওহোদ যুদ্ধের পর নাযিল হয়। তখন সত্তর জন মুসলমান শহীদ হয়েছিলেন। এ ঘটনাটির ফলে মদীনার ছোট জনবসতির বিভিন্ন গৃহে শহীদদের মীরাস কিভাবে বন্টন করা হবে এবং তারা যেসব এতিম ছেলেমেয়ে রেখে গেছেন তাদের স্বার্থ কিভাবে সংরক্ষণ করা হবে, এ প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছিল। এরি ভিত্তিতে আমরা অনুমান করতে পারি, প্রথম চারটি রুকু, ও পঞ্চম রুকূর প্রথম তিনটি আয়াত এ সময় নাযিল হয়ে থাকবে।
যাতুর রিকা’র যুদ্ধে ভয়ের নামায (যুদ্ধ চলা অবস্থায় নামায পড়া) পড়ার রেওয়ায়াত আমরা হাদীসে পাই। এ যুদ্ধটি চতুর্থ হিজরীতে সংঘটিত হয়। তাই এখানে অনুমান করা যেতে পারে, যে ভাষণে (১৫ রুকূ) এ নামাযের নিয়ম বর্ণনা করা হয়েছে সেটি এরি কাছাকাছি সময়ে নাযিল হয়ে থাকবে।
চতুর্থ হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে মদীনা থেকে বনী নযীরকে বহিষ্কার করা হয়। তাই যে ভাষণটিতে ইহুদীদেরকে এ মর্মে সর্বশেষ সর্তকবাণী শুনিয়ে দেয়া হয়েছিল যে, আমি তোমাদের চেহারা বিকৃত করে পেছন দিকে ফিরিয়ে দেবার আগে ঈমান আনো, সেটি এর পূর্বে কোন নিকটতম সময়ে নাযিল হয়েছিল বলে জোর অনুমান করা যেতে পারে।
বনীল মুসতালিকের যুদ্ধের সময় পানি না পাওয়ার কারণে তায়াম্মুমের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। আর এ যুদ্ধটি পঞ্চম হিজরীতে সংঘটিত হয়েছিল। তাই যে ভাষণটিতে (৭ম রুকূ) তায়াম্মুমের কথা উল্লেখিত হয়েছিল সেটি এ সময়ই নাযিল হয়েছিল মনে করতে হবে।
No comments
Thanks for your comments. I will reply you as soon as.