শিরোনাম

আয়িশা (রাঃ) এর জীবনী

আয়িশা
অন্য ব্যবহারের জন্য, দেখুন আয়িশা (দ্ব্যর্থতা নিরসন)।
আয়িশা বিনতে আবু বকর (রা.) ছিলেন নবী মুহাম্মদ (সা.) এর স্ত্রীগণের মধ্যে একজন। তিনি ছিলেন তাঁর তৃতীয় স্ত্রী। ইসলামের ঐতিহ্য অনুসারে, তাকে "উম্মুল মু'মিনিন" বা "বিশ্বাসীদের মাতা" হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। মুসলিম সম্প্রদায় তাকে নবী মুহাম্মদ (সা.) এর স্ত্রী হিসেবে অত্যন্ত সম্মান ও শ্রদ্ধা করে থাকেন। এছাড়া ইসলামের ঐতিহ্যগত ইতিহাসেও তার অবদান অনস্বীকার্য এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

♦প্রাথমিক জীবন
আয়িশা (রা.) ৬১৩ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে মতান্তরে ৬১৪ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে জন্মগ্রহণ করেন। আবু বকর (রা.) তার পিতা, যিনি মুহাম্মদ (সা.)এর অত্যন্ত বিশ্বস্ত একজন সাহাবী ও সহচর ছিলেন। তার মাতার নাম উম্মে রুমান।

♦মুহাম্মদ (সা.) এর সাথে বিয়ে
প্রচলিত নির্ভরযোগ্য তথ্যমতে, নবী মুহাম্মদ(সা.) এর সাথে ছয় বছর বয়স থাকাকালীন সময়ে আয়িশা (রা.) এর বিয়ে হয়। কিন্তু নয় বছর মতান্তরে দশবছর বয়স থেকে তার বৈবাহিক জীবন শুরু হয়। এর পূর্বে তিনি তার বিবাহপরবর্তী সময় তার পিত্রালয়েই শিশুবৎসলভাবে অতিবাহিত করেন। বয়সের দিক থেকে তিনি ছিলেন মুহাম্মাদ(সা.) এর স্ত্রীদের মাঝে কনিষ্ঠতম।

♦মুহাম্মদ (সা.) এর সাথে সম্পর্ক
হিজরতের পূর্বে মুহাম্মাদ (সা.) তার প্রথম স্ত্রী খাদিজা (রা.) এর মৃত্যুতে অত্যন্ত ব্যথিত ও অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। আয়িশা (রা.) এর সাথে তার বৈবাহিক জীবন অনেকাংশে তাকে সেই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। তার প্রথম স্ত্রীর পর আয়িশা ছিলেন তার সবচেয়ে প্রিয়তম স্ত্রী। অনেক নির্ভরযোগ্য বিশুদ্ধ হাদিসের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত। একটি হাদিসে দেখা যায়, এক সাহাবী যখন তাঁকে প্রশ্ন করলেন, "এই জগতে কোন মানুষটিকে আপনি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন ?" তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, "আয়িশা।" আরেকটি হাদিসে পাওয়া যায়, আয়শার(রা.) কক্ষটি তিনি এমনভাবে বানিয়েছিলেন যে তার দরজা সরাসরি মসজিদের দিকে ছিল। তিনিই ছিলেন একমাত্র নারী যিনি সামনে থাকা অবস্থায় তার কাছে ওহি অবতীর্ণ হয়েছিল। অধিকন্তু, আয়েশা ও মুহাম্মাদ (সা.) এর মাঝে অত্যন্ত সুসংহত বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পর্ক ছিল। তিনি তার অনেক জ্ঞান ও আদর্শ আয়শা (রা.)কে নিজ কথা ও কাজের মাধ্যমে প্রদান করেছিলেন এবং অনেক সাহাবীকেই তিঁনি আয়িশা (রা.) এর কাছ থেকে ধর্মীয় বিধান শিক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

♦ব্যভিচারের অপবাদ ও ওহি নাজিলের মাধ্যমে সতীত্বের প্রমাণ

পবিত্র কুরআনের সুরা নুরে আয়িশা(রা.)এর বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অভিযোগের ঘটনাকে নির্দেশ করা হয়েছে। ঘটনাটি ছিল নিম্নরূপ, আয়িশা (রা.) তার গলার হার খুঁজতে গিয়ে তাঁর হাওদা(উটের পিঠে পালকির ন্যায় কক্ষযুক্ত বাহন) ছেড়ে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে দাসগণ হাওদায় উঠে পড়েন এবং আয়িশার অনুপস্থিতিতে ওজনের তারতম্য না পেয়ে যাত্রা শুরু করে দেন। আয়িশা(রা.) ফিরে এসে দেখেন কাফেলা তাকে ছাড়াই চলে গেছে। তখন তিনি সেখানেই অবস্থান করতে থাকেন। পরদিন সকালে সাফওয়ান বিন আল-মু'আত্তাল নাম্নী নবী(সা.) এর সেনাদলের এক বেদুঈন সদস্য আয়িশাকে খুঁজে পায় এবং তাকে তাঁর কাফেলার পরবর্তী বিশ্রামস্থলে গিয়ে ফিরিয়ে দিয়ে আসে। এ ঘটনা দেখে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই, হাসসান বিন সাবিত, মিসতাহ ইবনে উসামা, হাম্মানাহ বিনতে জাহাশ (নবীর (সা.) অপর স্ত্রী জয়নব বিনতু জাহাশ'র ছোট বোন), এসব সাহাবী গুজব ছড়াতে থাকে , আয়িশা ও সাফওয়ান ব্যভিচার করে এসেছে। উসামা ইবনে জায়িদ নবীজি (সা.) এর কাছে আয়িশার প্রশংসা করে অপপ্রচারের বিরোধিতা করেন। কিন্তু আলি (রা.) মুহাম্মদ (সা.) কে পরামর্শ দিলেন যে, তিনি যেন আয়িশা(রা.) কে তালাক দেন। মুহাম্মদ(সা.) আয়িশা(রা.) এর সাথে এ ব্যাপারে সরাসরি কথা বলতে আসলে তিনি আয়িশা(রা.) এর ঘরে বসে থাকা অবস্থাতেই তাঁর উপর ওহি নাজিল হয় এবং তিনি ঘোষণা করেন যে, আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তিনি আয়িশা(রা.) এর সতীত্বের নিশ্চয়তার ওহি পেয়েছেন। সুরা নুরে ব্যভিচার ও অপবাদ বিষয়ে বিধান ও শাস্তির নিয়মের বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়। আয়িশা(রা.) এর অপবাদ রটনাকারীরা শাস্তি হিসেবে ৮০টি বেত্রাঘাত সাজাপ্রাপ্ত হন।

♦মধুর ঘটনা
নবী(সা.) প্রতিদিন আসরের সালাতের পর তার স্ত্রীদের কক্ষ পরিদর্শন করতেন এবং তাদের খোঁজখবর নিতেন। একবার তাঁর এক স্ত্রী জয়নব বিনতু জাহাশ এক আত্মীয়ের কাছ থেকে কিছু মধু পেলেন। এরপর থেকে যখনই নবীজী (সা.) জয়নবের ঘরে আসতেন, জয়নব তাকে কিছু মধু দিতেন,যা নবীজি (সা.) খুব পছন্দ করতেন। এরপর থেকে সবসময় মধু পান করার কারণে জয়নবের ঘরে নবীজি(সা.) অধিক সময় ব্যয় করতেন। এ ঘটনায় তার দুইজন স্ত্রী আয়িশা ও হাফসা ক্ষুব্ধ হলেন এবং একটা ফন্দি আঁটলেন। নবীজি (সা.) তাদের ঘরে একে একে গেলে তারা দুজনেই আলাদাভাবে নবীজিকে (সা.) বললেন, তারা নবীজির (সা.) মুখ থেকে দুর্গন্ধময় মাগাফির নামক কিশমিশের গন্ধ পাচ্ছেন। তিনি তা খেয়েছেন কিনা। উত্তরে তিনি তাদের বললেন যে তিনি জয়নবের কাছ থেকে মধু খেয়েছেন এবং তিনি আর কখনো সেটি খাবেন না। এর পরপরই সুরা তাহরিমের একটি আয়াত নাজিল হয় যাতে বলা হয়, আল্লাহ বলেছেন আল্লাহ কর্তৃক বৈধকৃত সকল খাবার তিনি খেতে পারবেন।

হে নবী, আল্লাহ আপনার জন্যে যা হালাল করছেন, আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে খুশি করার জন্যে তা নিজের জন্যে হারাম করেছেন কেন ? আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াময়। আল্লাহ তোমাদের জন্যে কসম থেকে অব্যহতি লাভের উপায় নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তোমাদের মালিক। তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।

— কুরআন, সুরা ৬৬ (আত-তাহরিম), আয়াত ১-২

এ ঘটনার পর লোকে বলাবলি করতে থাকে যে, রাসুল (সা.) এর স্ত্রীগণ তাঁর সাথে ধারালোভাবে কথা বলছে এবং তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এ ঘটনার কারণে নবী অত্যন্ত মর্মাহত হলেন। নবীজি (সা.) দীর্ঘ এক মাস তাঁর স্ত্রীগণের সাথে সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ রাখলেন। হাফসাকে তার পিতা উমর (রা.) খুব শাসালেন এবং তা নবীজি (সা.) কে বললেন। অবশেষে, নবীজি (সা.)এর স্ত্রীগণ তাঁর প্রতি অণুগত হলেন এবং সত্য কথা বলতে, বিনীত আচরণ করতে, এবং পরকালীন জীবনের প্রতি মনোযোগী হতে সম্মত হলেন।

♦মুহাম্মদ (সা.) এর মৃত্যু
আয়শা (রা.) বিবাহ পরবর্তী সমস্ত জীবনে নবী মুহাম্মদ (সা.) এর সর্বাধিক প্রিয় স্ত্রী ছিলেন। যখন তিনি অসুস্থ হলেন এবং মৃত্যু নিকটবর্তী হওয়ার আশঙ্কা করলেন তখন তিনি তার স্ত্রীগণকে জিজ্ঞাসা করলেন, পরবর্তী ক্রমে তিনি কার ঘরে থাকবেন ? যখন তাঁর স্ত্রীগণ বুঝতে পারলেন যে তিনি আয়শার সাথে থাকতে চাইছেন তখন তারাও তদানুযায়ী অনুমতি ও সম্মতি দিলেন। মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি তাঁর ঘরেই ছিলেন এবং তার এই প্রিয়তমা স্ত্রীর বাহুযুগলে মাথা রেখেই মহানবী(সা.) শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

♦সামাজিক কর্মকাণ্ড ও গুরুত্ব
মুহাম্মদ(সা.) এর মৃত্যুর পর আরও পনের বছর তিনি মদিনাতেই ছিলেন। তিনি তার অধিকাংশ সময় কুরআন ও রাসুল (সা.) এর আদর্শ অধ্যয়নে ব্যয় করতেন। আয়িশা(রা.) ছিলেন নবী মুহাম্মদ(সা.) এর তিনজন কুরআন মুখস্থকারী স্ত্রীদের মাঝে একজন। হাফসা(রা.) এর মতো আয়িশা(রা.) এর কাছেও নবী(সা.) এর মৃত্যুর পর লেখা কুরআনের অনুলিপি ছিল। আয়িশার(রা.) জীবনকালীন সময়েই ইসলামের বেশ কিছু প্রসিদ্ধ ও সুস্পষ্ট বিধিবিধান যেমন নারীদের পর্দার বিধান চালু হয়।

♦পরবর্তী ভূমিকা
খিলাফতকালীন সময়ে ভূমিকাসম্পাদনা
প্রথম ও দ্বিতীয় খিলাফতের সময় ভূমিকাসম্পাদনা
নবী (সা.) এর মৃত্যুর পর জনগণ আবু বকর (রা.) খলিফা নির্বাচন করেন। তখন আয়িশা(রা.) নবী (সা.)এর স্ত্রী এবং খলিফার কন্যা হিসেবে সমধিক সম্মান পেতেন। এমনকি জনগণ তাকে নবীজি (সা.) এর কাছ থেকে "সিদ্দিক"(সত্যবাদী) উপাধি প্রাপ্ত আবু বকর (রা.) এর কন্যা হিসেবে "সিদ্দিকা বিনতু সিদ্দিক"(সত্যবাদীর কন্যা সত্যবাদিনী) বলে ডাকতে শুরু করে। আবু বকর (রা.) তাঁর মৃত্যুর পূর্বকালে উমর (রা.) কে খলিফা নিযুক্ত করে যান। খলিফা উমর (রা.)-এর শাসনামলেও তিনি দাপটের সাথে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তসমূহে মতামত প্রদান করার স্বাধীনতা লাভ করেছিলেন।

♦তৃতীয় খিলাফতের সময়ের ভূমিকা
উমর (রা.) আততায়ীর হাতে আহত হওয়ার পর মৃত্যুপূর্বে উসমান (রা.)কে খলিফা নিযুক্ত করে যান। তিনি খলিফা হওয়ার পর উমাইয়াদের সুবিধা প্রদান করেন। খলিফা হওয়ার পর প্রথম দুই বছর উসমান (রা.)র সাথে আয়িশার তেমন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল না। এরপর থেকে বিভিন্ন কারণে উসমান (রা.) কে আয়িশা (রা.) ঘৃণা করতে শুরু করেন, যার মধ্যে অন্যতম ছিল সাহাবী আম্মার ইবনে ইয়াসিরকে ভুল বিচারে মারধর করা। এতে আয়িশা (রা.) রাগে ফেটে পড়েন এবং জনসম্মুখে বলে ওঠেন "এত তাড়াতাড়ি কীভাবে আপনি রাসুল (সা.)এর সুন্নাতকে ভুলে গেলেন যেখানে তাঁর চুলের গোছা, একটি জামা আর জুতো এখনো মলিন হয় নি ?.." এভাবে খলিফা উসমান (রা.) এর সাথে আয়িশার (রা.) রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। অবনতি একধাপ এগিয়ে যায় যখন ওসমান তার নিজ ভাই ওয়ালিদ ইবনে উকবা'র অপরাধের শাস্তির বিচার এড়িয়ে যান। আয়শা ও উসমানের মধ্যে এ নিয়ে তর্ক হয়, এক পর্যায়ে উসমান বলেন, কেন তিনি ঘর থেকে বের হলেন এবং কীভাবে তাকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছিল ? এর অর্থ ছিল এরকম ক্ষেত্রে আয়িশা ও তার মতো নারীদের কি এখনো রাষ্ট্রীয় বিষয়ে জড়িত হওয়ার অধিকার ও সামর্থ্য আছে ? জণগণ আয়িশা ও উসমানের সমর্থনে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ল, একদল উসমানের পক্ষ নিলো, আরেকদল আয়িশাকেই উসমানের উপরে যোগ্য বলে দাবি করল।

আবদুল্লাহ ইবনে সাদকে মিশরের গভর্নর নিযুক্ত করার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। মিশরের মুহাম্মাদ ইবনে হুজায়ফা উসমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের কাছে নবীর স্ত্রীদের নামে বানিয়ে মিথ্যা চিঠি লেখেন। জনগণ উসমানের খাবার ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। একটি বিদ্রোহী দল উসমানের বাড়ি অবরোধ করলে নবীর এক স্ত্রী সাফিয়া বিনতে হুয়াই তাকে আক্রমণ হতে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন, কিন্তু জনগণ তাকেও অসম্মানের সহিত সরিয়ে দেন, নবীর স্ত্রীর সাথে জনগণের এই ব্যবহারে আয়িশা খুবই অবাক ও মর্মাহত হন। মালিক আল আশতার আয়িশার কাছে উসমানকে হত্যা ও উক্ত চিঠি সম্পর্কে জানতে চাইলে আয়িশা উত্তর দেন, তিনি কখনোই মুসলিমগণ ও তাদের "ইমাম"কে হত্যার নির্দেশ দিতে চান নি। তিনি আরও দাবি করেন যে ওই চিঠিটি তার লেখা ছিল না। জনগণ উসমানের বিরোধিতা চালিয়ে যায়, ওদিকে আয়িশার মক্কা সফরের সময়ও চলে আসে। অবশেষে পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে আয়িশা (রা.) মক্কায় চলে যেতে প্রস্তুত হন। উসমান (রা.) তাকে অন্য কিছু না বললেও জনগণের উপর তার প্রভাবের কথা চিন্তা করে তাকে থেকে যেতে বললেও তিনি নিজ সিদ্ধান্তে অটল থেকে মক্কার পথে যাত্রা অব্যহত রাখেন এবং মক্কায় চলে যান।

♦উসমান (রা.) ঘাতক কর্তৃক নিহত হলে অনেক ব্যক্তিবর্গ আলি (রা.) কে হত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট, একথা বলাবলি করতে থাকে। আলি (রা.) সরাসরি এ কথা অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে জনগণ তাকে খলিফা নিযুক্ত করতে চাইলে তিনি অস্বীকৃতি জানান। তবুও জণগণ জোরপূর্বক তাকে খলিফা মনোনীত করে। এরপরেও হত্যার সংশ্লিষ্টতা বিষয়ে আলির সম্পর্ক বিষয়ে তর্ক বিতর্ক চলতে থাকে। একপর্যায়ে তা চরম আকার ধারণ করতে থাকে এবং আয়িশা (রা.)ও তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন। হত্যার প্রতিশোধ নেওবার উদ্দেশ্যে তিনি জনগণের সাথে এক হন এবং বসরার ময়দানে আলি (রা.) এর বিরুদ্ধে যুদ্ধের আয়োজনে শরিক হন। আলি (রা.)-এর বিরুদ্ধে এ যুদ্ধে তিনি পেছন থেকে নির্দেশনা ও নেতৃত্ব দেন। ইসলামের ইতিহাসে এ যুদ্ধটি বসরার যুদ্ধ বা উটের যুদ্ধ নামে পরিচিত। যুদ্ধে আলি (রা.) এর বিরুদ্ধবাহিনী পরাজিত হয় কিন্তু পরবর্তী ইতিহাসে এ যুদ্ধের প্রভাব ছিল ব্যাপক ও সুদূরপ্রসারী।

♦মৃত্যু
উম্মুল মু'মিনিন হযরত আয়িশা(রা.) রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫৮ হিজরি সনের ১৭ই রমজান(১৬ই জুলাই,৬৭৮ খ্রিষ্টাব্দ) মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৬৮ বছর। সাহাবী আবু হুরায়রা(রা.) তারাবিহ্'র নামাজের পর তার জানাজা পড়ান এবং জান্নাতুল বাকিতে তাকে কবরস্থ করা হয়।

No comments

Thanks for your comments. I will reply you as soon as.