শিরোনাম

সূরা আল-ফুরকান

সূরা আল-ফুরকান
কুরআন শরীফের ২৫তম সূরা

আল ফুরকান , (আরবি: سورة الفرقان‎‎), (সত্য মিথ্যার পার্থক্য নির্ধারণকারী গ্রম্থ) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ২৫ তম সূরা। এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ৭৭টি।

♦নামকরণ
প্রথম আয়াত (আরবী) থেকে সূরার নাম গৃহীত হয়েছে। কুরআনের অধিকাংশ সূরার মতো এ নামটিও বিষয়বস্তু ভিত্তিক শিরোনাম নয় বরং আলামত হিসেবে সন্নিবেশিত হয়েছে।

♦আয়াতসমূহ
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ

আল্লাহর নাম দিয়ে শুরু করছি যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

♦১-১০
تَبَارَكَ الَّذِي نَزَّلَ الْفُرْقَانَ عَلَى عَبْدِهِ لِيَكُونَ لِلْعَالَمِينَ نَذِيرًا
১)পরম কল্যাণময় তিনি যিনি তাঁর বান্দার প্রতি ফয়সালার গ্রন্থ অবর্তীণ করেছেন, যাতে সে বিশ্বজগতের জন্যে সতর্ককারী হয়

الَّذِي لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَلَمْ يَتَّخِذْ وَلَدًا وَلَمْ يَكُن لَّهُ شَرِيكٌ فِي الْمُلْكِ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ فَقَدَّرَهُ تَقْدِيرًا
২)তিনিই , যার অধিকারে রয়েছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী। তিনি কোন পুত্র সন্তান গ্রহণ করেন নাই। সার্বভৌমত্বে তাঁর কোন অংশীদার নাই। তিনিই সব কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং সেগুলিকে সুবিন্যস্ত করেছেন যথাযথ অনুপাতে।

وَاتَّخَذُوا مِن دُونِهِ آلِهَةً لَّا يَخْلُقُونَ شَيْئًا وَهُمْ يُخْلَقُونَ وَلَا يَمْلِكُونَ لِأَنفُسِهِمْ ضَرًّا وَلَا نَفْعًا وَلَا يَمْلِكُونَ مَوْتًا وَلَا حَيَاةً وَلَا نُشُورًا
৩)লোকেরা তাঁকে বাদ দিয়ে এমন সব উপাস্য তৈরি করে নিয়েছে যারা কোন জিনিস সৃষ্টি করে না বরং নিজেরাই সৃষ্ট, যারা নিজেদের জন্যও কোন উপকার বা অপকার করার ক্ষমতা রাখে না, যারা না জীবন-মৃত্যু দান করতে পারে আর না মৃতদেরকে আবার জীবিত করতে পারে।

وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا إِنْ هَذَا إِلَّا إِفْكٌ افْتَرَاهُ وَأَعَانَهُ عَلَيْهِ قَوْمٌ آخَرُونَ فَقَدْ جَاؤُوا ظُلْمًا وَزُورًا
৪)কাফেররা বলে, এটা মিথ্যা বৈ নয়, যা তিনি উদ্ভাবন করেছেন এবং অন্য লোকেরা তাঁকে সাহায্য করেছে। অবশ্যই তারা অবিচার ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে।

وَقَالُوا أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ اكْتَتَبَهَا فَهِيَ تُمْلَى عَلَيْهِ بُكْرَةً وَأَصِيلًا
৫)তারা বলে, এগুলো তো পুরাকালের রূপকথা, যা তিনি লিখে রেখেছেন। এগুলো সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর কাছে শেখানো হয়।

قُلْ أَنزَلَهُ الَّذِي يَعْلَمُ السِّرَّ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ إِنَّهُ كَانَ غَفُورًا رَّحِيمًا
৬)হে মুহাম্মাদ! বলো, “একে নাযিল করেছেন তিনিই যিনি পৃথিবী ও আকাশমণ্ডলীর রহস্য জানেন।” আসলে তিনি বড়ই ক্ষমাশীল ও দয়ার্দ্র।

وَقَالُوا مَالِ هَذَا الرَّسُولِ يَأْكُلُ الطَّعَامَ وَيَمْشِي فِي الْأَسْوَاقِ لَوْلَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مَلَكٌ فَيَكُونَ مَعَهُ نَذِيرًا
৭)এবং তারা বলে, " এ কি রকম রসুল, যে [সাধারণ মানুষের মত ] আহার করে এবং রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করে ? তার নিকট কোন ফেরেশতা কেন অবতীর্ণ করা হলো না , যে তাঁর সাথে থাকতো সতর্ককারীরূপে ?

أَوْ يُلْقَى إِلَيْهِ كَنزٌ أَوْ تَكُونُ لَهُ جَنَّةٌ يَأْكُلُ مِنْهَا وَقَالَ الظَّالِمُونَ إِن تَتَّبِعُونَ إِلَّا رَجُلًا مَّسْحُورًا
৮)অথবা তিনি ধন-ভান্ডার প্রাপ্ত হলেন না কেন, অথবা তাঁর একটি বাগান হল না কেন, যা থেকে তিনি আহার করতেন? জালেমরা বলে, তোমরা তো একজন জাদুগ্রস্ত ব্যক্তিরই অনুসরণ করছ।

انظُرْ كَيْفَ ضَرَبُوا لَكَ الْأَمْثَالَ فَضَلُّوا فَلَا يَسْتَطِيعُونَ سَبِيلًا
৯)দেখুন, তারা আপনার কেমন দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে! অতএব তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে, এখন তারা পথ পেতে পারে না।

تَبَارَكَ الَّذِي إِن شَاء جَعَلَ لَكَ خَيْرًا مِّن ذَلِكَ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَيَجْعَل لَّكَ قُصُورًا
১০)মঙ্গলময় তিনি, যদি তার ইচ্ছা হতো তিনি তোমাকে ইহা অপেক্ষা উত্তম জিনিস দিতে পারতেন, - বাগানসমূহ যার পাদদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত এবং বাস করার জন্য প্রাসাদ সমূহ।

♦১১-২০
بَلْ كَذَّبُوا بِالسَّاعَةِ وَأَعْتَدْنَا لِمَن كَذَّبَ بِالسَّاعَةِ سَعِيرًا
১১)আসল কথা হচ্ছে, এরা “সে সময়টিকে” মিথ্যা বলেছে এবং যে সে সময়কে মিথ্যা বলে তার জন্য আমি জ্বলন্ত আগুন তৈরি করে রেখেছি।

إِذَا رَأَتْهُم مِّن مَّكَانٍ بَعِيدٍ سَمِعُوا لَهَا تَغَيُّظًا وَزَفِيرًا
১২)অগ্নি যখন দূর থেকে তাদেরকে দেখবে, তখন তারা শুনতে পাবে তার গর্জন ও হুঙ্কার।

وَإِذَا أُلْقُوا مِنْهَا مَكَانًا ضَيِّقًا مُقَرَّنِينَ دَعَوْا هُنَالِكَ ثُبُورًا
১৩)যখন এক শিকলে কয়েকজন বাঁধা অবস্থায় জাহান্নামের কোন সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন সেখানে তারা মৃত্যুকে ডাকবে।

لَا تَدْعُوا الْيَوْمَ ثُبُورًا وَاحِدًا وَادْعُوا ثُبُورًا كَثِيرًا
১৪)(তখন তাদের বলা হবে) আজ একটি মৃত্যুকে নয় বরং বহু মৃত্যুকে ডাকো।

قُلْ أَذَلِكَ خَيْرٌ أَمْ جَنَّةُ الْخُلْدِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ كَانَتْ لَهُمْ جَزَاء وَمَصِيرًا
১৫) বল, " এটাই কি উত্তম, না স্থায়ী বেহেশ্‌ত , যার প্রতিশ্রুতি পূণ্যাত্মাদের দেয়া হয়েছে তা ? তাদের জন্য এটা হচ্ছে পুরষ্কার এবং সকল চাওয়া পাওয়ার শেষ গন্তব্য স্থল ।

لَهُمْ فِيهَا مَا يَشَاؤُونَ خَالِدِينَ كَانَ عَلَى رَبِّكَ وَعْدًا مَسْؤُولًا
১৬) তারা চিরকাল বসবাসরত অবস্থায় সেখানে যা চাইবে, তাই পাবে। এই প্রার্থিত ওয়াদা পূরণ আপনার পালনকর্তার দায়িত্ব।

وَيَوْمَ يَحْشُرُهُمْ وَمَا يَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ فَيَقُولُ أَأَنتُمْ أَضْلَلْتُمْ عِبَادِي هَؤُلَاء أَمْ هُمْ ضَلُّوا السَّبِيلَ
১৭) সেদিন আল্লাহ একত্রিত করবেন তাদেরকে এবং তারা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের এবাদত করত তাদেরকে, সেদিন তিনি উপাস্যদেরকে বলবেন, তোমরাই কি আমার এই বান্দাদেরকে পথভ্রান্ত করেছিলে, না তারা নিজেরাই পথভ্রান্ত হয়েছিল?

قَالُوا سُبْحَانَكَ مَا كَانَ يَنبَغِي لَنَا أَن نَّتَّخِذَ مِن دُونِكَ مِنْ أَوْلِيَاء وَلَكِن مَّتَّعْتَهُمْ وَآبَاءهُمْ حَتَّى نَسُوا الذِّكْرَ وَكَانُوا قَوْمًا بُورًا
১৮) তারা বলবে, "সব মহিমা তোমার ! আমাদের কি অধিকার ছিলো যে, তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে রক্ষাকর্তা হিসেবে গ্রহণ করবো ? কিন্তু তুমি তাদের ও তাদের পিতৃপুরুষদের জীবনে সুখ উপভোগের নানা জিনিষ দান করেছিলে। সুতারাং তারা তোমার উপদেশ ভুলে গিয়েছিলো। নিশ্চয়ই তারা পরিণত হয়েছে এক ধ্বংস প্রাপ্ত জাতিতে।"

فَقَدْ كَذَّبُوكُم بِمَا تَقُولُونَ فَمَا تَسْتَطِيعُونَ صَرْفًا وَلَا نَصْرًا وَمَن يَظْلِم مِّنكُمْ نُذِقْهُ عَذَابًا كَبِيرًا
১৯) এভাবে মিথ্যা সাব্যস্ত করবে তারা (তোমাদের উপাস্যরা) তোমাদের কথাগুলোকে যা আজ তোমরা বলছো, তারপর না তোমরা নিজেদের দুর্ভাগ্যকে ঠেকাতে পারবে, না পারবে কোথাও থেকে সাহায্য লাভ করতে এবং তোমাদের মধ্য থেকে যে-ই জুলুম করবে তাকে আমি কঠিন শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করাবো।

وَما أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنَ الْمُرْسَلِينَ إِلَّا إِنَّهُمْ لَيَأْكُلُونَ الطَّعَامَ وَيَمْشُونَ فِي الْأَسْوَاقِ وَجَعَلْنَا بَعْضَكُمْ لِبَعْضٍ فِتْنَةً أَتَصْبِرُونَ وَكَانَ رَبُّكَ بَصِيرًا
২০) আপনার পূর্বে যত রসূল প্রেরণ করেছি, তারা সবাই খাদ্য গ্রহণ করত এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করত। আমি তোমাদের এককে অপরের জন্যে পরীক্ষাস্বরূপ করেছি। দেখি, তোমরা সবর কর কিনা। আপনার পালনকর্তা সব কিছু দেখেন।

No comments

Thanks for your comments. I will reply you as soon as.