দেশে রাজনৈতিক বিপর্যয় চলছে: আমীর, ইসলামী আন্দোলন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, যাদের প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা নাই তারাই আজ রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ফলে তাদের হাতে শিক্ষক লাঞ্জিত ও অবহেলিত হচ্ছে। শিক্ষকরা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ৯৫ ভাগ মুসলমানের বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী আইন পড়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। অথচ ইউরোপ, আমেরিকা, যুক্তারাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য ইসলামী আইন পড়ানো হয়। মুসলমানদের এসব অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই ইসলামী আন্দোলন বিভিন্ন পেশার সহযোগী সংগঠন তৈরি করছে। জাতীয় শিক্ষক ফোরাম, ইশা ছাত্র আন্দোলন, দ্রুতগতিতে লক্ষ্যপানে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এ লক্ষ্য হচ্ছে আদর্শ সমাজ ও আদর্শ ছাত্র সমাজ প্রতিষ্ঠা। পীর সাহেব চরমোনাই জাতীয় শিক্ষক ফোরামের নেতাকর্মীদেরকে আগামী নির্বাচনে হাতপাখার পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, রাজনীতি মানুষের কল্যাণের জন্য, যে রাজনীতি মানুষকে আতঙ্কিত করে তা কারো কাম্য হতে পারে না। সরকার নির্বাচনকে ভয় পায়। এজন্য নির্বাচন দিতে চায় না, দিলেও যেনতেন নির্বাচন দিয়ে পুনরায় ক্ষমতায় যেতে চায়, কিন্তু দেশবাসী এধরণের নির্বাচনের নামে তামাশা আর দেখতে চায় না।
শুক্রবার (৪ মে’১৮) সকাল ৯টায় জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বক্তব্যশেষে পীর সাহেব নতুন নির্বাচিত কমিটিকে শপথবাক্য পাঠ করান। নব নির্বাচিত কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সহ-সভাপতি অধ্যাপক নাসির উদ্দিন ও মাওলানা এবিএম জাকারিয়াকে সেক্রেটারী জেনারেল করে জাতীয় শিক্ষক ফোরামের ২০১৮-১৯ সেশনের জন্য নতুন কমিটি ঘোষণা করেন পীর সাহেব চরমোনাই।
সম্মেলনে পঠিত ৮ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, শিক্ষানীতি ২০১০ ও শিক্ষাআইন ২০১৬ বাতিল, অবসর ভাতা ও কল্যাণ তহবিলের টাকা অবসরের সর্বোচ্চ ৬ মাসের মধ্যে প্রদান, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চতর স্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামলূক করা, ইবতেদায়ি মাদরাসা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বৈষম্য দূরীকরণ, শিক্ষার ৮০ ভাগ দায়িত্ব পালনকারী বেসরকারি শিক্ষকদের ৫ ভাগ ইনক্রিমেন্ট প্রদান এবং কওমী মাদরাসার সনদের স্বীকৃতির যথাযথ দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।
রাজধানীর বিএমএ ভবন অডিটোরিয়ামে সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মাওলানা এবিএম জাকারিয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম, রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, প্রফেসর ড. মাইমুল আহসান খান, ঢাবি’র সহযোগি অধ্যাপক মুফতী হোসাইনুল বান্না। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ শেখ ফজলে বারী মাসউদ, প্রভাষক আবদুস সবুর, প্রিন্সিপাল মাওলানা অলিউল্লাহ, মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরসহ প্রায় ২০টি জেলা প্রতিনিধিগণ।
মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, শিক্ষকদেরকে জাগতিক শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামের নৈতিকতা শিক্ষা না দিলে তারা সঠিক শিক্ষা দিতে পারবেন না। তাই শিক্ষকদেরকে জাগতিক শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।
প্রফেসর ড. মাইমুল আহসান খান বলেন, ইসলাম একটি কালজয়ী আদর্শ। দিন দিন ইসলামের আলোয় আলোকিত হচ্ছে অমুসলিমরা। আমি বিশ্বে অনেক দেশে ইসলামী ‘ল’ পড়িয়েছি। কিন্তু ৯২ ভাগ মুসলশানের দেশে পড়াতে পারিনি। ইসলামের কথা এদেশে ভালভাবে বলা যায় না। তারপরও ইসলামের আলো জ্বালাতে চেষ্টা করতে হবে। তিনি আশা করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে এনে শিক্ষার্থীদের সঠিক শিক্ষা দেয়ার দায়িত্ব পালন করবে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, শিক্ষার ৮০ ভাগ দায়িত্ব পালনকারী বেসরকারি শিক্ষকদের ৫ ভাগ ইনক্রিমেন্ট ও পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দিতে হবে। মনে রাখতে হবে শিক্ষকদের সম্মান না দিলে শিক্ষার উদ্দেশ্য সফল হবে না। তিনি ইবতেদায়ী মাদরাসা ও সরকারি প্রাইমারি স্থলের বিরাজমান বৈষম্য দূর করার দাবি জানান।
No comments
Thanks for your comments. I will reply you as soon as.